বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান আকাশ থেকে ছুটে এসে বিধ্বস্ত হয় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে। এক ভয়াবহ বিস্ফোরণ। এরপর চারপাশে শুধু ধোঁয়া, আগুন আর মানুষের আর্তনাদ। এখন পর্যন্ত ২২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দগ্ধ, আহত আর নিখোঁজদের খোঁজে চলছে প্রাণপণ উদ্ধারকাজ।
যদিও এর মধ্যেই চলছে নানা ধরনের গুজব। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রবাসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের। তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, আপনারা যারা বলছেন বা বলার চেষ্টা করছেন শিশুদের মৃতদেহ লুকানো হয়েছে বা ইচ্ছে করে ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে তারা আসলে কেন বা কি কারণে এ ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছেন?
পোস্টে সায়ের বলেন, আমার বাচ্চারা যদি সময়মতো বাসায় না ফেরে আমার স্ত্রী ও আমি অস্থির হয়ে যাই, এবং যে কোন মা-বাবা এবং অভিভাবকরাই এতে অত্যন্ত বিচলিত হয়ে পড়েন। আর সন্তানের স্কুলে কোন দূর্ঘটনা ঘটলে (আল্লাহ মাফ করুন) আপনি যতই ব্যস্ত বা যে কাজে থাকেন, যেভাবে সম্ভব ছুটে যাবেন, আর এটাই স্বাভাবিক।
আজকের মর্মান্তিক, বেদনাদায়ক ঘটনায় যেসকল শিশু ও শিক্ষকরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের সকলেরই পরিবার ও স্বজন আছে। আপনার কি মনে হয় কোন মা-বাবা এবং তাঁদের আত্মীয় স্বজন নিজ পরিবারের প্রিয় সদস্যটিকে খুঁজে না পেয়ে কোনভাবে শান্ত থাকবেন? অথবা পৃথিবীর কোন শক্তি তাঁদের থামাতে পারবে সন্তানকে খুঁজতে? আমি একজন বাবা, আমার বাচ্চাদের যদি হঠাৎ খুঁজে না পাওয়া যায়, আমি কি করবো সেটা ভাবতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছিনা, কোন মা-বাবাই বোধ করবেন না।
তাহলে আপনারা যারা বলছেন বা বলার চেষ্টা করছেন শিশুদের মৃতদেহ লুকানো হয়েছে বা ইচ্ছে করে ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে তারা আসলে কেন বা কি কারণে এ ধরনের প্রচারনা চালাচ্ছেন? আমি গত ৪ ঘন্টায় আহত ২৩জন শিশুর নিকটজনের সাথে কথা বলেছি, যারা তাঁদের সন্তানদের স্কুলে খুঁজে পাননি তাঁরা সকলেই বিভিন্ন হাসপাতালে আহত সন্তানদের পেয়েছেন। মৃত কারো পরিবারের সাথে কথা বলার মতো সাহস আমার হয়নি।
সর্বশেষ অনুরোধ জানিয়ে সায়ের লিখেন, সন্তান এখনো নিখোঁজ এমন পরিবারদের আমি অনুরোধ করবো অনুগ্রহ করে বিষয়টি জানাতে। কোন তৃতীয়পক্ষ না, যাদের সন্তান বা নিকটজনকে এই ঘটনার পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা, তাঁরা দয়া করে বিষয়টি তুলে ধরুন।
আর যদি এমন কিছু না হয়ে থাকে, তাহলে একটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনাকে ভিন্ন পথে নেয়ার নোংরা-কুৎসিত পরিকল্পনা থেকে বিরত থাকুন।