উত্তরার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আলোচনায় মাইলস্টোন স্কুলটির শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরী। যিনি একাই প্রাণ বাঁচিয়েছেন ২০ জন কোমলমতি শিশুর। অবুঝ এসব শিশুদের প্রাণ বাঁচাতে গিয়েই বিসর্জন দিয়েছেন নিজের জীবন।
মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার মৃত্যুতে সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে দেখা যাচ্ছে শোকাবহ চিত্র। এবার সামনে এসেছে সাহসী এই নারীর পরিচয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার রহমানের আদরের ভাতিজি তিনি। প্রয়াত জিয়াউর রহমানের মামাতো ভাই এম আর চৌধুরীর কন্যা এই মাহরিন চৌধুরী।
নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরী পাড়ার মেয়ে মাহরিন চৌধুরী ছিলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন আদর্শ শিক্ষিকা। শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবস বিসর্জন দেওয়া এই নারী কখনোই তার রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ করতেন না।
অথচ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার সময় যখন অনেক নেতা গ্রেপ্তার এড়াতে দূরে থাকতেন, তখন মাহরিন চৌধুরী সাহসিকতার সঙ্গে খাবার নিয়ে হাজির হতেন হাসপাতাল কিংবা কারাগারে। জিয়া পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ থাকলেও কেউ ক্ষুনাক্ষরেও জানেনি তার সত্যিকারের পরিচয়।
মাহরিন চৌধুরী একজন নিষ্ঠাবান শিক্ষিকা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন বিশ্বজুড়ে। স্বজনদের ভাষ্যে, মাহরিন প্রচারবিমুখ মানুষ ছিলেন। কোনো মিডিয়া কাভারেজ বা বাহবায় কোন রকমের আগ্রহ ছিল না তার। তিনি কাজ করতেন নিঃশব্দে, নিঃস্বার্থভাবে, মানুষের জন্য।
সোমবার (২১ জুলাই) মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হলে ভবনের ভিতরে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে এগিয়ে যান মাহরিন চৌধুরী। ২০ জন শিক্ষার্থীকে নিরাপদে বের করতে সক্ষম হলেও নিজে আর বের হতে পারেননি। ঘটনাস্থলেই তার শরীরের একটি অংশ দগ্ধ হয়। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় সোমবার রাত সাড়ে দশটায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এদিকে সামাজিক মাধ্যমে তার আসল পরিচয় বের হয়ে আসার পর থেকেই হচ্ছে নানা আলোচনা। কেউ বলছেন আপোষহীন নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভাতিজি বলে কথা। জিয়া যেমন সাধারণ মানুষের জন্য ভাবেনি নিজের কথা, দিয়ে গেছেন আপন প্রাণ। তেমনি তার ভাতিজিও নিজের প্রাণ দিয়ে গেলেন কোমলমতি শিশুদের বাঁচাতে গিয়ে।