Thursday, July 17, 2025

হা*মাসের ‘ইতিবাচক’ সাড়া, সোমবার চুক্তির ঘোষণা দিতে পারেন ট্রাম্প

আরও পড়ুন

গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাবে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। শনিবার ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে হামাসের জবাব তাদের হাতে পৌঁছেছে এবং প্রস্তাবের বিস্তারিত বিষয়গুলো নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।

ম্যাপে গাজা উপত্যকার অবস্থান

ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ একটি বেনামি সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাবে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটির জবাব ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হারেৎজ পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামাসের প্রতিক্রিয়া এবং গাজা যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টায় ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো বলছে, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আলোচনার জন্য একটি ইসরায়েলি প্রতিনিধিদলের কাতারের রাজধানী দোহায় যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে এর কোনো নির্দিষ্ট সময় জানানো হয়নি। এর আগে চ্যানেল ১২ জানিয়েছিল, দোহায় এই আলোচনা দেড় দিনের বেশি সময় নেবে না।

অন্যদিকে, মিশরের রাষ্ট্র পরিচালিত আল-কাহেরা নিউজ চ্যানেল জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি চূড়ান্ত সমাধানে পৌঁছানোর জন্য পরোক্ষ আলোচনা পুনরায় শুরু করতে কায়রো বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ শুরু করেছে।

আরও পড়ুনঃ  একাদশে ভর্তি: যুক্ত হচ্ছে ‘জুলাই গণঅভ্যু*ত্থান’ কোটা, বাদ পড়ছে মুক্তিযো*দ্ধা কোটা

এর আগে শুক্রবার রাতে হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে তারা মধ্যস্থতাকারীদের কাছে ‘ইতিবাচক’ সাড়া দিয়েছে।

ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম কান-এর তথ্যমতে, হামাস তিনটি প্রধান দাবিতে জোর দিচ্ছে: পূর্ববর্তী ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া, প্রস্তাবিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধি এবং গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পূর্ণাঙ্গ প্রত্যাহার।

ইসরায়েলি পত্রিকা হায়োম জানিয়েছে, আলোচনায় প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রত্যাহার। পত্রিকাটি বলছে, ইসরায়েল গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফাহকে খান ইউনিস থেকে বিভক্তকারী মোরাগ অক্ষে নিজেদের উপস্থিতি বজায় রাখতে চায়, অন্যদিকে হামাস সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি করছে।

এদিকে, ইয়েদিওথ আহরোনোথ পত্রিকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার বৈঠকে গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা দিতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ  যে জরুরি নির্দেশনা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য

হামাস তাদের বিবৃতিতে প্রস্তাবের বিস্তারিত কিছু না জানালেও ইসরায়েলি ও মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রস্তাবের মূল শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি। এই সময়ে হামাস পাঁচ ধাপে ১৮ জন বন্দির মরদেহের পাশাপাশি জীবিত ১০ জন ইসরায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দেবে। হারেৎজের মতে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার প্রথম দিনে আটজন জীবিত ইসরায়েলি পণবন্দিকে, ৫০তম দিনে দুজনকে এবং যুদ্ধবিরতির শেষ দিনে আটজনের মরদেহ মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এর বিনিময়ে ইসরায়েল তাদের কারাগারে থাকা বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে এবং গাজার ভেতর থেকে সম্মত এলাকাগুলো থেকে পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহার করবে। এই সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি তেল আবিবে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে, কারণ ইসরায়েল ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটির নিরস্ত্রীকরণ এবং এর নেতাদের নির্বাসনে পাঠানোর দাবি করে আসছে।

আরও পড়ুনঃ  মাধ্যমিকের ছাত্রকে লাগাতার যৌন নির্যাতন শিক্ষিকার, নিয়ে যেতেন পাঁচ তারকা হোটেলে

তেল আবিবের হিসাবে, গাজায় এখনো ২০ জন জীবিতসহ মোট ৫০ জন পণবন্দি রয়েছে। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থা এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলের কারাগারে ১০,৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছে, যারা নির্যাতন, অনাহার এবং চিকিৎসার অবহেলার শিকার হচ্ছেন, যার ফলে অনেকের মৃত্যু হয়েছে।

আন্তর্জাতিক আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েল গাজায় নির্বিচার হামলা অব্যাহত রেখেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় এ পর্যন্ত ৫৭,৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, উপত্যকায় চালানো যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ