গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত চারজনের দাফন ও সৎকার সম্পন্ন হয়েছে। তবে নিহতদের কারোরই সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়নি, এবং ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা ও পোশাক ব্যবসায়ী দীপ্ত সাহাকে বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে পৌর শ্মশানে সৎকার করা হয়। একই রাতে কোটালীপাড়ার হরিণাহাটি গ্রামের টাইলস মিস্ত্রির সহকারী রমজান কাজীকে এশার নামাজের পর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকালে শহরের শানাপাড়ার মোবাইল ব্যবসায়ী সোহেল রানা ও সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার এলাকার ক্রোকারিজ দোকানের কর্মচারী ইমন তালুকদারকে পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল জনতা নিহত ৪ জনের মরদেহ পোস্ট মর্টেম করতে না দিয়ে জেলা হাসপাতাল থেকে জোরপূর্বক নিয়ে যায়।’ প্রতিবেদনটি প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজেও শেয়ার করা হয়েছে।
বুধবার এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্ক ও লঞ্চঘাট এলাকায় আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
সংঘর্ষে চারজন নিহত এবং অন্তত ৯ জন গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক মানুষ আহত হন। হামলাকারীরা শহরের বিভিন্ন স্থাপনা, দোকানপাট ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায়।
নিহতরা হলেন- গোপালগঞ্জ শহরের কোটালীপাড়ার হরিণাহাটি গ্রামের কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (১৯), শানাপাড়ার সোহেল রানা (৩৫), উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (৩০) এবং সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার এলাকার ইমন তালুকদার (২৪)।
গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস জানান, সংঘর্ষে নিহত চারজনের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে আনা হয়। এছাড়া গুরুতর আহত অন্তত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহত চার জনের লাশের ময়নাতদন্ত ছাড়াই জোরপূর্বক হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসেন তাদের স্বজনরা। বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. জিবিতেষ বিশ্বাসও লাশ জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।