রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের সমাবেশে বিএনপির কেউ না যাওয়ার প্রসঙ্গে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দাওয়াত দেয়নি, যাব কিভাবে। দাওয়াত দিলেও যে যেতাম বিষয়টি তেমন না।
শনিবার রাজধানীর বনানীর হোটেল অমনি রেসিডেন্সিতে “জুলাই অভ্যুত্থান ও রাজনীতিতে গুজব” শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যানালাইসিস (BCSA)।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ৫ আগস্টের আগে আমরা সবাই এক ছিলাম। ৫ আগস্টের পর সবাই আলাদা হয়ে গেছি। গণতান্ত্রিক রাজনীতির সংগ্রামের বেদনার কথা আমরা সবাই ভুলে গেছি। এখন গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো বিভক্ত হয়ে গেছি।
তিনি বলেন, এখনো নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা হয়নি। এখনো নির্বাচন কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টা কোনো নির্দেশনা দিয়েছে বলে আমাদের জানা নাই। সেই অবস্থার মধ্যে সবাই পিআর বলে চিল্লাচ্ছে।
ইসলামি আন্দোলনের মহাসমাবেশের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এর আগে পিআরের দাবিতে একটা দল মহাসমাবেশ করেছে। তখন একজন আমাকে বললো তারা কয়টি আসন পেতে পারে, আমি বললাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নিয়ে যদি একটি আসন হয় তাহলে তারা একটি আসন পেতে পারে। এই কথা যে জিজ্ঞেস করেছিলো তারা আজ সমাবেশ করছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের পলিটিক্যাল কালচারে, ভোটারদের লেভেলে এখনো আমরা ইভিএমে টিপ দেয়া শেখাতে পারি নাই। অথচ আছি পিআর নিয়ে। পিআর পদ্ধতিতে ইলেকশনটা হচ্ছে নিজের ভাগবাটোয়ারা। কিন্তু গণতন্ত্রের কী অবস্থা হবে, দেশের স্থিতিশীলতা আসবে কিনা, সরকার গঠনের মত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কিনা, অস্থিতিশীল সরকার হলে দেশের কী অবস্থা হবে সেইটা নিয়ে কারো কোনো চিন্তা নাই। এসময় দলগুলোর ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থ ত্যাগ করার পরামর্শ দেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কোনভাবেই বাংলাদেশে যেনো ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান না হয়। আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত মরিয়া প্রমাণ করলো তারা ভারতের লোক। কারণ তারা ভারতের করদ রাজ্য বানানোর জন্য এখানে অনেক চেষ্টা করেছে। শেষ পর্যন্ত তারা একটি জায়গায় অন্তত সফল হয়েছে যে নিজেরা অন্তত ভারতে আশ্রয় পেয়েছে।
আওয়ামী লীগকে আমরা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে মনে করি। তারা বাংলাদেশের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করে না। বাংলাদেশকে শাসন করবে, শোষণ করবে কিন্তু বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিশ্বাস করবে না। এটা প্র্যাকটিক্যালি প্রমাণ করে দিয়ে তারা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।
ভারতে গুম থাকার প্রমঙ্গে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান না হলে হয়ত ভারতেই মরতে হত। গুম নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলে তারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে অপমান করে।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক পরামর্শক কমিটির বিশেষ সহকারী ফারজানা শারমিন পুতুল, দ্য ওয়ার্ল্ড ব্যাংক সাবেক সিনিয়র হেলথ নিউট্রিশন স্পেশালিস্ট জিয়াউদ্দিন হায়দার, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সহযোগী অধ্যাপক ড. বুলবুল আশরাফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী অধ্যাপক তানভীর হাবিব জুয়েল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সালমা বেগম প্রমূখ।