দীর্ঘ ২১ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের ভয়ংকর আগ্রাসনের শিকার গাজাবাসী। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামাসকে উৎখাত আর তাদের কবল থেকে জিম্মি উদ্ধারের নামে ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চলছেই। ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় প্রতিদিনই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে লাশের মিছিল। নিরাপদ বলে কোনো স্থান বাকি নেই গাজাবাসীর জন্য। একদিকে আকাশ ও স্থল অভিযান, অন্যদিকে দুর্ভিক্ষ; গাজা যেন সাক্ষাৎ নরক হয়ে উঠেছে তার বাসিন্দাদের জন্য।
আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও গাজায় গণবিধ্বংসী যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৭ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
অপরদিকে গাজায় ভয়ংকর এ গণহত্যা শুরুর পর থেকেই আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে গেছে ইসরায়েলি বাহিনীতে। গাজা আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৪৪ জন ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছেন। সবশেষ বৃহস্পতিবারও (১০ জুলাই) ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় স্দে তেইমান সামরিক ঘাঁটিতে নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন আরও এক ইসরায়েলি সেনা। সম্প্রতি গাজা যুদ্ধ থেকে ফিরে এসেছিলেন তিনি। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
হারেৎজের তথ্য অনুযায়ী, নিহত ওই সেনা গোলানি ব্রিগেডের সদস্য ছিলেন। তিনি গাজা থেকে ফিরে ঘাঁটিতে বিশ্রামে ছিলেন এবং সেখানে সামরিক পুলিশের জেরার মুখে পড়েন। মাসখানেক আগে তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত শুরু হয় এবং তার অস্ত্র জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তবে হারেৎজ জানায়, ওই সেনা তার এক ঘুমন্ত বন্ধুর অস্ত্র ব্যবহার করে নিজেকে গুলি করেন। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে তদন্তের বিষয়টি ‘ব্যক্তিগত আচরণের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়’ বলেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তবে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।
জানা গেছে, ওই সেনার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু গত মাসে গাজার একটি বিস্ফোরণে নিহত হন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আত্মহত্যার হার বেড়ে গেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে।
গত রোববারও (৬ জুলাই) এক রিজার্ভ সেনা মানসিক চাপের কারণে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর সাফেদের কাছে জঙ্গলে আত্মহত্যা করেন। ইসরায়েল হায়োম পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, শুধু ২০২৪ সালেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ২১ সেনা আত্মহত্যা করেছেন। আর মে মাসে হারেৎজ জানিয়েছিল, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ৪২ সেনা আত্মহত্যা করেছেন।